পিরোজপুর সদরের কদমতলা এলাকায় প্রাইভেটকার নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খালে পড়ে আটজন নিহত হয়েছেন। এদের মধ্যে একই পরিবারের চারজনের বাড়ি নাজিরপুর উপজেলার মাটিভাঙ্গা ইউনিয়নের হোগলাবুনিয়া গ্রামে। ওই গ্রামের মৃধা বাড়িতে চলছে শোকের মাতম। খোঁড়া হচ্ছে পাশাপাশি চারটি কবর।
এ ঘটনায় অপর আরেক পরিবারের চারজনের বাড়ি শেরপুরের সদর উপজেলার ভীমগঞ্জ গ্রামে।
বুধবার (৯ অক্টোবর) রাত সোয়া ২টায় সদর উপজেলার নাজিরপুর সড়কের নূরানী গেট এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। দুই পরিবার মিলে কুয়াকাটায় ঘুরতে গিয়েছিলেন বলে জানিয়েছেন স্বজনরা।
নিহতরা হলেন—নাজিরপুরের হোগলাবুনিয়া গ্রামের বাসিন্দা মো. শাওন (৩২), তার স্ত্রী আমেনা বেগম (২৫), শাওনের দুই ছেলে শাহাদাত (১০) ও আব্দুল্লাহ (৩)। শাওন দুর্ঘটনাকবলিত গাড়িটির চালক ছিলেন। এ ছাড়া আরেক পরিবারের নিহতরা হলেন—মোতালেব (৪৫), তার স্ত্রী সাবিনা (৩৬), তাদের কন্যা সন্তান মুক্তা (১০) ও ছেলে শোয়াইব (২)। তাদের বাড়ি শেরপুরের সদর উপজেলার ভীমগঞ্জ গ্রামে।
নিহত শাওনের বড় ভাই জাহিদুল ইসলাম বলেন, আমরা তিন ভাই এক বোন। শাওন আমাদের সবার ছোট, সে আর্মিদের সিভিল বিভাগের অঙ্গ প্রতিষ্ঠানে (সিএইচডি) কাজ করতেন। দুই সন্তান নিয়ে আমার ভাই সুখে-শান্তিতে ছিল। একটি সড়ক দুর্ঘটনা সব শেষ করে দিয়েছে। আমাদের পরিবারের চারজনের মৃত্যুর খবরে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
জাহিদুল ইসলাম আরও বলেন, বাদ এশা জানাজা শেষে তাদের পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হবে। সেখানে একই সারিতে চারজনের জন্য কবর খোঁড়া হয়েছে। শেরপুরের যে চারজন মারা গেছে তাদের পরিবার আসার পর দুই পরিবারকে একসঙ্গে মরদেহ হস্তান্তর করা হয়েছে।
পিরোজপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম এন্ড অপারেশনস) মো. মুকিত হাসান খাঁন বলেন, পিরোজপুরে সড়ক দুর্ঘটনায় দুই পরিবারের আটজনের মৃত্যু হয়েছে। পুলিশের পক্ষ থেকে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত করে কী কারণে এ দুর্ঘটনা হয়েছে তা বিস্তারিত জানা যাবে। তবে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, চালকের অসতর্কতায় কিংবা ঘুমিয়ে পড়ার কারণে এ দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।
উল্লেখ্য, বুধবার (৯ অক্টোবর) দিবাগত রাত ২টার দিকে পিরোজপুর সদর উপজেলার নাজিরপুর সড়কের নূরানী গেট এলাকায় দুর্ঘটনায়কবলিত হয়ে খালে পড়ে যায় প্রাইভেটকারটি। রাত সোয়া ২টায় খালে গাড়ি পড়ে যাওয়ার খবর পায় ফায়ার সার্ভিস। এরপর পিরোজপুর ফায়ার স্টেশনের একটি ইউনিট রাত আড়াইটার দিকে ঘটনাস্থলে পৌঁছে উদ্ধারকাজ শুরু করে। কিছুক্ষণের মধ্যে আরও একটি ইউনিট সেখানে গিয়ে যুক্ত হয়। একে একে গাড়িতে থাকা মোট আটটি মরদেহ উদ্ধার করা হয়।