মানিকগঞ্জ প্রতিনিধি: মানিকগঞ্জের সিংগাইর উপজেলার গোবিন্দলে হেফাজত ইসলামের মিছিলে গুলি চালিয়ে চারজনকে হত্যার ঘটনায় প্রায় এক যুগ পর সাবেক সংসদ সদস্য ও কন্ঠশিল্পী মমতাজ বেগমকে প্রধান আসামি করে একটি মামলা হয়েছে।
গতকাল বুধবার মানিকগঞ্জের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট রাহুল দে’র আদালতে করা ওই মামলায় মানিকগঞ্জ-২ আসনের সাবেক এমপি মমতাজ বেগমসহ ৯০ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরও ৫০–৬০ জনকে আসামি করা হয়।
মামলাটি করেছেন নিহত চারজনের একজন মাওলানা নাসির উদ্দিনের ভাই মো. শহিদুল ইসলাম। এতে উপজেলা আওয়ামী লীগের ৫২ জন নেতাকর্মী ও ৩৮জন জন পুলিশ সদস্যের নাম উল্লেখ করা হয়।
মামলা সূত্রে জানা যায়, ২০১৩ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি সিংগাইর উপজেলার গোবিন্দল গ্রামে পুলিশ ও আওয়ামী লীগ নেতা–কর্মীরা গুলি করে চারজনকে হত্যা করেন।
মামলায় যাদের আসামি করা হয়েছে তাঁদের মধ্যে আছেন–সিঙ্গাইর পৌরসভার সাবেক পৌর মেয়র ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি মীর মো. শাহজাহান, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মুশফিকুর রহমান খান হান্নান, সিংগাইর উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও বলধারা ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুল মাজেদ খান, সাধারণ সম্পাদক শহিদুর রহমান ওরফে ভিপি শহীদ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. সায়েদুল ইসলাম, সিংগাইর পৌর মেয়র আবু নঈম মো. বাশার, পৌর কমিশনার আব্দুস সালাম খান, সমেজ উদ্দিন, উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক রমেজ উদ্দিনসহ ৫২ জন।
আসামির তালিকায় থাকা পুলিশ সদস্যরা হলেন– তৎকালীন দায়িত্বে থাকা মানিকগঞ্জ সদরের সার্কেল, সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার মো. কামরুল ইসলাম, মানিকগঞ্জ ডিবি পুলিশের ওসি মো. মহিবুল আলম, মদন মোহন বণিক, মোহাম্মদ রবিউল ইসলাম, সিংগাইর থানার এসআই আদিল মাহমুদ, মোজাম্মেল হোসেনসহ ৩৮ জন।
জানা যায়, ২০১৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে তৎকালীন গণজাগরণ মঞ্চ থেকে মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.)–নিয়ে কটূক্তি ও ইসলামবিদ্বেষী কর্মকাণ্ডের প্রতিবাদে একই বছরের ২৪ ফেব্রুয়ারি গোবিন্দল থেকে মুসল্লিদের একটি প্রতিবাদ মিছিল বের হয়ে গোবিন্দল বাজারের দিকে যায়। সেখানে আগে থেকেই আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের কর্মীরা অস্ত্রসস্ত্রসহ পুলিশ বাহিনীর সাথে উপস্থিত ছিলেন। এক পর্যায়ে মিছিলে গুলি করা হয়। ওই ঘটনায় গোবিন্দল গ্রামের মাওলানা নাসির উদ্দিন, আলমগীর হোসেন, নাজিম উদ্দীন ও শাহ আলম নিহত হন। আহত হন অর্ধশতাধিক মানুষ।
এ বিষয়ে সাবেক সংসদ সদস্য ও সিঙ্গাইর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি কণ্ঠশিল্পী মমতাজ বেগমের মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।
সিংগাইর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জাহিদুল ইসলাম বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। এখনো মামলার কপি পাইনি। তবে আদালত থেকে কোনো নির্দেশনা পেলে তদন্ত করে রিপোর্ট দেওয়া হবে।